• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১১ পূর্বাহ্ন |
  • Bangla Version
নিউজ হেডলাইন :
করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি, মৃত্যু ১ যশোরের বায়েজীদ হাসান হত্যা মামলার ২ জন পলাতক আসামীকে ঢাকা ভাটারা থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৬, যশোর ও র‌্যাব-১ গোপালগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ৬ বছরের শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি সবুজ’কে পটুয়াখালী হতে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৬ Mostbet App Download For Android Apk And Ios 2023 Mostbet 314 Casino Azərbaycanda Bukmeker Kontoru Mostbet Azerbaycan Yukle Android Os Apk Və Ios App-d Mostbet Az-90 Kazino Azerbaycan ən Yüksək Bukmeyker Rəsmi Sa 0898520760 ফের আগ্রাসনের চেষ্টা করলে ইসরায়েলকে শক্তিশালী জবাবের হুঁশিয়ার ইরানের গাজায় এক গণকবরেই মিলল ৩০০ লাশ ইসরায়েলের গভীরে হামলার দাবি হিজবুল্লাহর বেনজীরের সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক দুর্নীতির একটা সীমা থাকে, এটা সাগরচুরি বেনজীরের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট প্রভাবমুক্ত থেকে দুদককে অনুসন্ধান করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতারের আমিরের বৈঠক কাতারের সঙ্গে পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই

স্ত্রী-সন্তান ও নিজের নাম কমিটি থেকে বাদ দিতে শামীম ওসমানের চিঠি

স্ত্রী ও সন্তান এখনই প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতিতে আসুক, সেটি চাইছেন না আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। যে কারণে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কমিটি থেকে নিজেরসহ স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি এবং জ্যেষ্ঠ সন্তান ইমতিনান ওসমান অয়নের নাম বাদ দিতে কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর চিঠি দিয়েছেন তিনি। শামীম ওসমানের এই সিদ্ধান্তের প্রতি একমত পোষণ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরাও। 

সম্প্রতি ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের পর প্রকাশ পায় ওই কমিটির ১নং থেকে ৩নং কার্যকরী সদস্যের তালিকায় রয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তার স্ত্রী ও জেলা মহিলা সংস্থার সভানেত্রী সালমা ওসমান লিপি এবং জ্যেষ্ঠ সন্তান ইমতিনান ওসমান অয়নের নাম। এ বিষয়ে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেও তাদের তিনজনের পরিবর্তে অপর তিনজন ত্যাগী নেতার নাম দিয়ে মূল্যায়িত করার মত দিয়েছেন শামীম ওসমান।

জানা গেছে, গত ১০ ডিসেম্বর ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় জেলা আওয়ামী লীগ। বুধবার ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগকে দেওয়া শামীম ওসমানের ওই চিঠিতে কার্যকরী সদস্য হিসেবে তিনিসহ স্ত্রী ও ছেলের নাম রাখায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এ বিষিয়ে বুধবার (১৩ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্যাডে লেখা ওই চিঠিতে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান লিখেছেন- ‘আমি ও আমার পরিবার মনে করছি, ফতুল্লা থানা এলাকায় আমাদের চেয়েও ত্যাগী, যোগ্য ও রাজপথের অসংখ্য সক্রিয় নেতাকর্মী রয়েছেন। যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করে আমাদের মাতৃতুল্য জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য লড়াই করছেন। আমরা মনে করি, ওই তিনটি কার্যকরী সদস্য পদে আমাদের পরিবর্তে উল্লেখিত ত্যাগী ও যোগ্য নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে আপনারা তিনজনকে নির্বাচন করে তাদের মূল্যায়িত করলে আমরা আরও বেশি আনন্দিত হব।’

সংসদ সদস্য শামীম ওসমান প্রেরিত চিঠিপ্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল ও সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী সময় নিউজকে বলেন, এমন চিঠি দিয়ে আমাদের নেতা এমপি শামীম ওসমান ও তার পরিবার আবারো মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন।

ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের শীর্ষ এই দুই নেতা বলেন, শামীম ওসমান প্রমাণ করেছেন ত্যাগী নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি কতটা আবেগ ধারণ করেন। আমরা তার এ আবেগকে সম্মান জানাই। তবে বিষয়টি আমরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।

জানা গেছে, সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের চতুর্থ প্রজন্ম। প্রত্যক্ষ রাজনীতি না করলেও নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কঠোর নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় রয়েছেন তিনি। মূলত তার কারণেই নারায়ণগঞ্জে ছাত্রলীগ মডেল সংগঠনে পরিণত হয়েছে।

অপরদিকে আওয়ামী লীগে কোনো পদে না থেকেও বিভিন্ন সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আলোচিত হয়েছেন শামীম ওসমানের স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি। বিশেষ করে করোনাকালীন ভয়াবহ পরিস্থিতির সময়ে তার ভূমিকা উঠে এসেছে জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমেও।

এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান সময় নিউজকে বলেন, কর্মীরাই আমার দলের প্রাণ। আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা মনে করি, আমাদের চেয়েও যোগ্য এবং ত্যাগী বহু নেতাকর্মী রয়েছেন, যাদের মূল্যায়ন করা উচিত।

উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে ওসমান পরিবারের বর্ণাঢ্য ইতিহাস রয়েছে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে এ পরিবারটির অবদান ছিল অবিস্মরণীয়। ওসমান পরিবারের প্রাণপুরুষ খান সাহেব ওসমান আলী ১৯৪৬ সালে সাধারণ নির্বাচনে (নারায়ণগঞ্জ দক্ষিণ নির্বাচনী এলাকা) ঢাকার নবাব খাজা হাবিবুল্লাহকে পরাজিত করে বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন এম ওসমান আলী। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তার বিশেষ ভূমিকা ছিল। এ জন্য তিনি কারারুদ্ধ হন। ১৯৬২ সালের শাসনতান্ত্রিক আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে ওসমান আলী সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন। খান সাহেব ওসমান আলীর ছেলে একেএম শামসুজ্জোহা ছিলেন ভাষা আন্দোলনের অগ্রণী সৈনিক। তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ভ্রমণ করে জনমত গঠন ও তহবিল সংগ্রহে একেএম শামসুজ্জোহা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে প্রথম বেতার ভাষণ প্রদান করেন এবং দেশের সর্বোচ্চ আদালতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন একেএম শামসুজ্জোহা।

স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৯৭৩ সালে নারায়ণগঞ্জ থেকে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর মন্ত্রিত্ব গ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে তাকে ১৮ মাস কারাবন্দি রাখা হয়। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অনন্য সাধারণ ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে ২০১২ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়। তার স্ত্রী নাগিনা জোহাও ছিলেন ভাষা আন্দোলনের অগ্রণী সৈনিক।

এই পরিবারেরই বড় সন্তান একেএম নাসিম ওসমান জাতীয় পার্টির হয়ে চারবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরিবারের মেজো সন্তান সেলিম ওসমান একাধারে ব্যবসায়ী নেতা এবং সংসদ সদস্য হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান একেএম শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত। ১৯৯৬, ২০১৪ এবং সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসন থেকে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন প্রভাবশালী এই নেতা।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.